বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামের দুর্নীতির খতিয়ান এখন প্রকাশ্য গোপন বিষয়। তাঁর নেতৃত্বে দপ্তরটিতে অনিয়ম যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। অতিরিক্ত ব্যয় প্রাক্কলন, দরপত্র প্রক্রিয়ায় অনিয়ম, প্রকৌশলীদের মাধ্যমে অনৈতিক সুবিধা আদায়—সব মিলিয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে চলছে দুর্নীতির মহোৎসব।

সূত্র জানায়, নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম কয়েকজন ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশ করে প্রকল্পের কাজ পাইয়ে দেন কমিশনের বিনিময়ে। কাজের বিল পরিশোধ ও জামানত ফেরতের ক্ষেত্রেও তিনি খোলাখুলি কমিশন দাবি করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ঠিকাদার অভিযোগ করেন, বাবুগঞ্জ ও আগৈলঝাড়ায় টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ (টিএসসি) নির্মাণ প্রকল্পের দুটি কাজ তিনি “বসুন্ধরা হাউজিং (প্রাঃ) লিমিটেড” নাম ব্যবহার করে নিজেই নিয়েছেন এবং পরে ২৬ কোটি টাকার প্রকল্প ৭ শতাংশ কমিশনে বিক্রি করে দিয়েছেন।

গত ২৩ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বরিশাল সার্কিট হাউজে প্রকৌশলী শহিদুল ইসলামের কমিশনের অগ্রিম ৩৫ লাখ টাকা তাঁর দপ্তরের কম্পিউটার অপারেটর রাশেদের কাছে জমা দেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের প্রতিনিধি। কিন্তু রাশেদ সেই টাকা নিয়ে উধাও হয়ে গেলে শুরু হয় তোলপাড়। এতে শহিদুল ইসলামের কমিশন-ভিত্তিক দুর্নীতির চিত্র আরও স্পষ্ট হয়ে উঠে।

এছাড়া, বরিশালে যোগদানের পর থেকেই শহিদুল ইসলাম ঢাকাস্থ প্রভাবশালী কর্মকর্তাদের নিয়মিত উপহার পাঠিয়ে নিজের অবস্থান মজবুত করেন। বিশেষ করে সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আলতাফ হোসেনকে প্রতি সপ্তাহে ইলিশের ঝুড়ি পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে।

দপ্তরের একাধিক সূত্র জানায়, অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রাক্কলন, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যোগসাজশ, এবং প্রকল্প অনুমোদনের ক্ষেত্রে নির্বাহী প্রকৌশলী, সহকারী প্রকৌশলী ও উপ-সহকারীরা অনৈতিক সুবিধা নিচ্ছেন নিয়মিতভাবে।

স্থানীয় ঠিকাদাররা বলেন, “দুর্নীতি না করলে বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল দপ্তরে কোনো কাজ পাওয়া সম্ভব নয়।”

👉 এই বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কোনো কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।