ফরিদপুর বিভাগ ঘোষণার বিরোধিতা নিয়ে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেও মানবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ফরিদপুরবাসী। খাদ্য অধিদপ্তরের নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরিদপুরে আগত মাদারীপুর ও শরীয়তপুর জেলার পরীক্ষার্থীদের ফুল, খাবার ও আশ্রয়ে বরণ করে নিয়েছে ফরিদপুরের তরুণ স্বেচ্ছাসেবীরা।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) সরকারি রাজেন্দ্র কলেজসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে উপ-পরিদর্শক পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের ভেন্যু নির্ধারিত হওয়ায় মাদারীপুর ও শরীয়তপুরের শতাধিক পরীক্ষার্থীকে ফরিদপুরে আসতে হয়।

তাদের স্বাগত জানাতে তরুণ নেতা খায়রুল ইসলাম রোমান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি আহ্বান জানান—‘ফরিদপুরে আসা পরীক্ষার্থীরা যেন কোনো কষ্ট না পান, আমরা পাশে আছি।’ তার পোস্ট ভাইরাল হলে দুই জেলার প্রায় ৪০ জন পরীক্ষার্থী আগেই যোগাযোগ করেন। পরে শুক্রবার রাতেই তারা ফরিদপুরে এসে পৌঁছান।

রোমান জানান, “আমরা তাদের হাতে লাল গোলাপ দিয়ে বরণ করেছি, থাকার ও খাওয়ার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা বিনামূল্যে করেছি।”

শনিবার পরীক্ষার দিন “আমরা ফরিদপুরবাসী” ব্যানারে তরুণদের কয়েকটি সংগঠনের সদস্যরা কেন্দ্রের সামনে অন্তত দুই শতাধিক পরীক্ষার্থীর হাতে ফুল, পানি ও জুস তুলে দেন। পরীক্ষার আগে তাদের মোবাইল ও ব্যাগ নিরাপদে সংরক্ষণ করে পরবর্তীতে ফেরত দেওয়া হয়।

মাদারীপুরের পরীক্ষার্থী জহির উদ্দিন বলেন, “ভেবেছিলাম পোস্টটা হয়তো দেখানোর জন্য দেওয়া। কিন্তু আসার পর ফরিদপুরের মানুষের আন্তরিকতা দেখে অভিভূত হয়েছি।”
শরীয়তপুরের সাইফুল ইসলাম বলেন, “একদিন আগেই এসে ভাবছিলাম কোথায় থাকব। কিন্তু ফরিদপুরের তরুণরা আমাদের যেভাবে যত্ন নিয়েছে, মনে হয়নি অন্য কোথাও আছি।”

ফরিদপুরের তরুণ স্বেচ্ছাসেবী আবরার ফাহাদ বলেন, “সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফরিদপুর নিয়ে কিছু ভুল ধারণা তৈরি হয়েছিল। আমরা আমাদের আচরণের মাধ্যমেই প্রমাণ করেছি—আমরা সবাই বৃহত্তর ফরিদপুরের মানুষ, একে অপরের ভাই।”

এই ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগে অংশ নেন খায়রুল ইসলাম রোমান, আবরার ফাহাদ, কাজী রিয়াজ, মাহমুদুল হাসান, নিলয় চৌধুরী, পারভেজ হাসান, বাহারুল ইসলাম, আশিকুর রহমান, ইয়াসীন মণ্ডল, রবিউল ইসলাম, রাহুল ভান্ডারীসহ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা।