গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য ফিরে এলো ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায়। শনিবার বিকেলে উপজেলার বড়গ্রাম ইউনিয়নের সৈয়দপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এক মনোমুগ্ধকর লাঠিখেলার আসর।
সৈয়দপাড়া গ্রামের তরুণ সমাজের উদ্যোগে এবং এনামুল, আশরাফ ও ফারুক হোসেনের আয়োজনে এই লাঠিখেলার আয়োজন যেন গ্রামীণ উৎসবে রূপ নেয়।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বড়গ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক মো. হাবিবুর রহমান হাবিব। সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফা কালামিয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাজেদুল করিম সোহেল, মো. হানিফ, হাসমত আলী, সিরাজুল ইসলাম মন্টু, আব্দুল জলিল লেবু, মোস্তাক মাস্টার, শহীদুল ইসলাম মাস্টারসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
ঢোলের তালে তালে শুরু হয় লাঠিখেলা। স্থানীয় খ্যাতনামা লাঠিখেলোয়াড় হযরত আলী, মজনু মিয়া, আব্দুল খালেক, মিস্টার, এছহাক আলীসহ অনেকে অংশ নেন খেলায়। তাঁদের চমকপ্রদ কৌশল, দ্রুতগতির লাঠি ঘূর্ণন আর শক্তির প্রদর্শনে দর্শকরা হাততালি ও উল্লাসে ফেটে পড়েন। মাঠজুড়ে সৃষ্টি হয় প্রাণবন্ত উৎসবমুখর পরিবেশ।
লাঠিখেলা শেষে মঞ্চে পরিবেশিত হয় যাদু প্রদর্শনী। মুক্তাগাছার পুদুরবাড়ীর বিখ্যাত যাদুশিল্পী মো. ফিরোজ আহমেদ এবং তাঁর দুই সহযোগী হাবিব ও ফরহাদ একের পর এক চমকপ্রদ যাদু পরিবেশন করে দর্শকদের মুগ্ধ করেন। শিশু থেকে বয়স্ক—সবাই মেতে ওঠেন আনন্দে ও বিস্ময়ে।
স্থানীয়রা জানান, “এমন আয়োজন এখন আর সহজে দেখা যায় না। আজকের অনুষ্ঠান আমাদের শৈশবের স্মৃতি ফিরিয়ে এনেছে।”
আয়োজকেরা বলেন, “গ্রামের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধরে রাখতে ভবিষ্যতেও এ ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে।”
গ্রামীণ ঐতিহ্যের প্রাণ লাঠিখেলা ও লোকজ বিনোদনের এমন মিলনমেলা প্রমাণ করে—বাংলার সংস্কৃতি আজও জীবন্ত; একটু যত্ন আর ভালোবাসাই পারে একে নতুনভাবে জাগিয়ে তুলতে।