রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলার শুকনাছড়ি বেনুবন বৌদ্ধ বিহারে বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) বুদ্ধের নীতি অনুসরণে ৩৫তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। অনুষ্ঠানে লোভ ও ঈর্ষা পরিহার ও মৈত্রী বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধর্মীয় ক্রিয়া-কর্ম সম্পন্ন করা হয়।

🔹 অনুষ্ঠান উদ্বোধন

প্রতিষ্ঠিত রীতিনীতির আলোকে সকালে রত্নবোধি শ্রমনকে উপসম্পাদা প্রদান (ভিক্ষু) করা হয়। এরপর আগত অতিথি ভিক্ষুদের ফুল দিয়ে বরণ করেন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি স্বাগত চাকমা।
বিহারের প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠান শুরু হয় পঞ্চশীল গ্রহণ, বুদ্ধ মূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপুরস্কার দান, পিণ্ডুদান, হাজার প্রদীপদান ও আকাশ প্রদীপ দান-এর মাধ্যমে।

🔹 প্রধান অনুষ্ঠান

বেলা ২টায় কল্পতরু ও কঠিন চীবর শোভাযাত্রা মঞ্চে আয়োজনের মাধ্যমে মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। এ সময় পঞ্চশীল গ্রহণ, কল্পতরু ও কঠিন চীবর দানসহ বিভিন্ন দ্রব্য উৎসর্গ করা হয়।

🔹 উপস্থিত বিশিষ্টজন

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন—

  • বনযোগীছড়া ইউপি চেয়ারম্যান সন্তোষ বিকাশ চাকমা

  • সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার চাকমা

  • সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য ননাবী চাকমা

  • ওয়ার্ড সদস্য চিজি মুনি চাকমা, দীপায়ন চাকমা

  • শিক্ষক ও প্রগতিশীল নেতৃবৃন্দ

🔹 ধর্মীয় অনুশীলন ও দান

প্রথম পর্বে সুমঙ্গল থের, পুন্য কির্তি মহাথের, চন্দ্রবংশ মহাথের ধর্মদেশনা দেন।
দ্বিতীয় পর্বে বুদ্ধদত্ত মহাথের, বিমল জ্যোতি মহাথের, পূন্যজ্যোতি মহাথের, শ্রদ্ধালঙ্কার মহাথের উপাসক-উপাসিকাদের প্রতি ধর্মদেশনা প্রদান করেন।
উপাসিকা পান্না চাকমা উপস্থিত জৈষ্ঠ্য ভিক্ষু শ্রদ্ধালঙ্কার মহাথের নিকট কঠিন চীবর দান করেন। এ সময় ভক্তদের দ্বারা “সাধু, সাধু, সাধু” ধ্বনিতে বিহার এলাকা ভরে ওঠে।

🔹 অংশগ্রহণ ও প্রথা

কঠিন চীবর দানে স্থানীয় ভিক্ষুসংঘ, উপাসক-উপাসিকা এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চল থেকে আগত ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশ নেন।
উল্লেখ্য, বহু বছর ধরে প্রবর্তিত নিয়ম অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা তৈরি, রং করা, কাপড় বোনা এবং চীবর তৈরি করে ভিক্ষুদের নিকট দান করা হয়। এছাড়া প্রয়োজন অনুযায়ী বাজার থেকে কাপড় কিনে সেলাই করেও চীবর দান করা হয়।