বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্রকোপ দিন দিন ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও হাজার হাজার মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে অধিকাংশ রোগীই রাজধানী ঢাকা ও আশেপাশের শহরগুলোর বাসিন্দা।

বিশেষ উদ্বেগের বিষয় হলো, একদিনেই ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১২ জনে দাঁড়িয়েছে। যা চলতি বছরের জন্য দৈনিক মৃত্যুর সর্বোচ্চ রেকর্ড। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, ড্রেনেজ ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং জনগণের অসচেতনতার কারণে এডিস মশার প্রজনন দ্রুত বাড়ছে। ফলে রোগ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, হাসপাতালে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। রোগীর সংখ্যা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ায় ডাক্তার ও নার্সরা অতিরিক্ত চাপের মধ্যে কাজ করছেন। অনেক হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ, স্যালাইন এবং রক্ত সরবরাহও ব্যাহত হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করা। এজন্য প্রত্যেককে বাড়ির চারপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলা এবং মশারি ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সরকার জানিয়েছে, পরিস্থিতি মোকাবেলায় ইতোমধ্যে জরুরি টিম গঠন করা হয়েছে এবং হাসপাতালগুলোতে অতিরিক্ত শয্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে সচেতনতা ও জনসাধারণের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয় বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।