বরিশালের হিজলা উপজেলার ধুলখোলা ইউনিয়নের বাথুয়া গ্রামে চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে আছেন চার সন্তানের জননী মারুফা বেগম। দেড় বছর আগে স্বামী চলে যাওয়ার পর থেকে সংসারের সমস্ত দায় কাঁধে তুলে নিয়েছে তার পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে সিফাত।

দুই বছরের কন্যা সন্তান রিমিকে কোলে নিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে মারুফা বেগম বলেন,
“আইজ দেড় বছর হইল আমার স্বামী আমাগো থুয়ে চলে গেছে। চারটা পোলাপান নিয়া খুব কষ্টে আছি। অনেক সময় খাইতে পারি না। আমার পোলারে পড়ালেখা ছাইড়া গাঙ্গে যাইতে হয় খাওনের টাহা জোগাড় করতে। আমি আমার স্বামীরে ফেরত চাই।”

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মারুফা বেগমের স্বামী রাসেল মাতাব্বর বছর দেড়েক আগে একই গ্রামের নজির হাওলাদারের বিবাহিত মেয়ে খালেদার সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। পরে তিনি খালেদাকে নিয়ে পালিয়ে যান। সেই থেকে তিনি ঢাকায় বসবাস করছেন এবং স্ত্রী-সন্তানের কোনো খোঁজখবর রাখছেন না।

সিফাতের দাদা নুরুল ইসলাম বলেন,
“রাসেল পালাইয়া যাওয়ার পর ওর বৌ আর পোলাপান অনেক কষ্টে আছে। আমার নাতি সিফাত স্কুল ছাইড়া গাঙ্গে যাইয়া কামাই করে। ওগো কোনো সরকারি কার্ডও নাই। সরকার যদি সাহায্য করত, ওরা একটু ভালোভাবে বাঁচতে পারত।”

ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী বড় মেয়ে সিনথিয়া জানায়,
“আমরা দাদার ওপর নির্ভর করি। ভাই স্কুল ছাইড়া কামাই করে। বাবা কোরবানির ঈদে দুই দিন আইছিল, তারপর আবার চুপচাপ চলে গেল।”

স্থানীয়রা জানান, রাসেল মাতাব্বরের পরকীয়া সঙ্গী খালেদা এর আগেও তিনটি সংসার ভেঙেছেন। তার কারণে আরও একটি পরিবার ধ্বংসের মুখে পড়েছে। এলাকাবাসী সরকারের কাছে এই অসহায় পরিবারটির পুনর্বাসন ও সহায়তার দাবি জানিয়েছেন।