আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে ঘুষ, হয়রানি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের একাধিক অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, থানায় যোগদানের পর থেকেই আশুলিয়া এলাকায় আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে এবং বেড়েছে ছিনতাই, খুন, ধর্ষণসহ নানা অপরাধ।
ওসি হান্নান যোগদানের প্রথম দিকে স্থানীয়দের সঙ্গে ভদ্র ব্যবহার করলেও কিছুদিন পর আচরণে পরিবর্তন আসে। অভিযোগ রয়েছে, তিনি থানায় দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের বদলি-পোস্টিংয়ে ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দকে প্রাধান্য দেন এবং নিজের ঘনিষ্ঠ অফিসারদের দিয়ে ‘সিভিল টিম’ পরিচালনা করেন।
স্থানীয় রিয়াজ নামে একজন জানান, “আমার বন্ধুকে থানায় নেওয়ার পর আমি জানতে চাইলে ওসি আমাকে গালিগালাজ করেন, ফোন কেড়ে নেন এবং বৈষম্যবিরোধী মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখান।”
আরও অভিযোগ রয়েছে, ওসি হান্নান মাদক ব্যবসায়ী ‘ছোট বিল্লাল’-এর কাছ থেকে প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ হিসেবে নেন। আশুলিয়ার বগাবাড়ী এলাকার জুয়ার আসর থেকেও নিয়মিত মাসোহারা তোলেন বলে জানা গেছে।
পুলিশের এক সাবেক সদস্য জানান, “ওসি হান্নান বাইরে থেকে নম্র হলেও ভিতরে তিনি ভয়ংকর চরিত্রের। আমরা একবার মাদক ব্যবসায়ীকে ধরতে গেলে তিনি আমাদের গালিগালাজ করে পরদিন বদলি করে দেন।”
স্থানীয় ইব্রাহিম নামে একজন বলেন, “আমার আড়ৎ নিয়ে বিরোধের জেরে ওসি রাতে পুলিশ পাঠিয়ে হয়রানি করেন। আমার নামে মিথ্যা মামলা দেখিয়ে ভয় দেখান।”
এছাড়াও ওসি হান্নান স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে গোপনে বৈঠক করেন এবং তাদের কাছ থেকেও আর্থিক সুবিধা নেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
ধামসোনা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. আসাদুল্লাহ দুলাল বলেন, “ওসি হান্নান ভূমিদস্যুদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আমার নামে পাঁচটি মামলা দিয়েছে। তিনি তদন্ত ছাড়াই হয়রানি করছেন।”
স্থানীয়দের প্রশ্ন—পুলিশ জনগণের বন্ধু, কিন্তু রক্ষক যখন ভক্ষকে পরিণত হয়, তখন সাধারণ মানুষ কার কাছে ন্যায়বিচার পাবে? তারা ওসি হান্নানের বিরুদ্ধে তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি আব্দুল হান্নান সাংবাদিকদের বলেন, “আপনি সামনে আসেন, তারপর কথা বলবো।” পরে থানায় উপস্থিত হলে তিনি বলেন, “আমি কোনো কথা বলবো না, যা বলার আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলবেন।”