সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রেজাই রাফিন সরকার বলেছেন,
“বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে, যেখানে স্বাস্থ্যবিধি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা এখনও পুরোপুরি উন্নত নয়, সেখানে টাইফয়েড একটি বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি। এই রোগ প্রতিরোধে টিকা গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই।”
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর ২০২৫) নগর ভবনে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে আয়োজিত অবহিতকরণ সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আগামী ১২ অক্টোবর থেকে সারা দেশের মতো সিলেট মহানগরীতেও শুরু হচ্ছে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (TCV) ক্যাম্পেইন। ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর সহায়তায় এক মাসব্যাপী এই কর্মসূচির আওতায় মহানগরীর ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী সকল শিশু এবং প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে এক ডোজ করে টিকা দেওয়া হবে।
রেজাই রাফিন সরকার বলেন,
“অনেকে ভুলভাবে মনে করেন, টিকা নিলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ গুজব। করোনাভাইরাসের টিকাদানের সময়ও এমন ভ্রান্ত ধারণা ছড়ানো হয়েছিল। টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুমোদিত এবং নেপাল ও পাকিস্তানে শতভাগ সফলভাবে প্রয়োগ হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, এখন তথ্যপ্রযুক্তির যুগ — গুগলে সার্চ করলেই টিকার সব তথ্য পাওয়া যায়। তাই ভয়ের কোনো কারণ নেই, বরং সঠিক তথ্য জেনে শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
সভায় সিসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ইপিআই টিকা কেন্দ্র ছাড়াও নগরীতে ৪টি স্থায়ী টিকা কেন্দ্র চালু করা হয়েছে। ১২ অক্টোবর থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত টিকাদান চলবে। ছিন্নমূল ও পথশিশুদেরও টিকা দেওয়া হবে, এমনকি যাদের জন্মনিবন্ধন নেই, তারাও একবারের জন্য ভ্যাকসিন সনদ পাবে। নিবন্ধিতরা অনলাইনে সনদ ডাউনলোড করতে পারবেন।
সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়কারী ডা. সুফী মো. খালিদ বিন লুৎফর।
এছাড়াও বক্তব্য দেন—
সিসিক সচিব মো. আশিক নূর, সিলেট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাখাওয়াত এরশেদ, মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার আলী ফরিদ আহমেদ, পরিবার পরিকল্পনা অফিসের সহকারী পরিচালক আবুল মনসুর আসজাদ, সমাজসেবা কর্মকর্তা জনি রঞ্জন দে, জাতীয় ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা হাবীব আহমদ শিহাব, এবং মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের সহকারী প্রোগ্রামার তোফায়েল আহমদ চৌধুরী প্রমুখ।