টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ (২৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে কুয়াকাটা সহ পটুয়াখালী জেলার জেলেরা গভীর সমুদ্রে ইলিশ শিকারে ফিরছেন। দীর্ঘ বিরতির পর এই সূচনার সঙ্গে উপকূলজুড়ে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
পটুয়াখালী জেলার প্রায় ৭৯,০৪৩ জেলে পরিবার এই নিষেধাজ্ঞার সমাপ্তিতে স্বস্তি পেয়েছে। জেলেরা ইতোমধ্যে ট্রলার, জাল, জ্বালানি ও খাদ্যসামগ্রী প্রস্তুত করেছেন। মহিপুর ও আলীপুরের খাপড়াভাঙ্গা নদীতে সারি সারি ট্রলার নোঙ্গর করে অপেক্ষা করছে। কেউ জ্বালানি তুলছেন, কেউ জাল মেরামত করছেন, আবার কেউ মাছ ধরার সরঞ্জাম সাজাচ্ছেন। রাত ১২টা বাজলেই তারা একসঙ্গে সমুদ্রে নামবেন—বুকভরা আশা নিয়ে এবার ভাগ্য খুলবে ইলিশ শিকারে।
প্রতি বছর কুয়াকাটার আন্ধার মানিক নদীর মোহনায় মা ইলিশ ডিম দেয়। মা ইলিশ রক্ষায় ২০০৬ সাল থেকে সরকার ২২ দিনের এই অবরোধ কার্যকর করে আসছে।
তবে জেলেদের অভিযোগ, নিষেধাজ্ঞার সময়ে ভারতীয় জেলেরা দেশের জলসীমায় ঢুকে নির্বিঘ্নে মাছ শিকারে যাওয়া চালিয়ে নেয়। এছাড়া সরকারি প্রণোদনার ২৫ কেজি চালও অনেক সময় পর্যাপ্ত না হয়ে ২২ কেজি পাওয়া যায়, আবার অনেকে প্রণোদনার বাইরে থাকেন। তারপরও মহাজনের ধার শোধ ও জীবিকার তাগিদে তারা সমুদ্রমুখী হচ্ছেন।
মহিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফজল গাজী বলেন, “জেলেদের জন্য প্রণোদনা বাড়ানো এখন সময়ের দাবি।”
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, এবারের অবরোধ শতভাগ সফল হয়েছে, তবে প্রণোদনা যে অপর্যাপ্ত তা অস্বীকার করা যায় না।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, “ভারতীয় জেলেদের সঙ্গে সমন্বয় করে ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞার মতো ব্যবস্থা ভবিষ্যতে কার্যকর করার সুপারিশ পাঠানো হয়েছে। জেলেদের দাবির আলোকে আশা করা যায়, এটি বাস্তবায়িত হবে।”