৮ দফা দাবিতে আগামী ১৩ অক্টোবর সোমবার বান্দরবানে সকাল-সন্ধ্যা সর্বাত্মক হরতালের ডাক দিয়েছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) সকালে শহরের গ্র্যান্ড ভ্যালী মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান কাজী মো. মজিবর রহমান এ ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে কাজী মো. মজিবর রহমান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালি সম্প্রদায় যুগের পর যুগ বিভিন্ন ধরনের বৈষম্যের শিকার হয়ে সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের নাগরিকদের মতো সমান অধিকার নিশ্চিত করতে এ দাবিগুলো পেশ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “আমরা বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছি, কিন্তু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই আগামী ১৩ অক্টোবর পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ ও সর্বস্তরের জনগণের পক্ষ থেকে বান্দরবানে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিচ্ছি।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক মো. নাছির উদ্দিন, দপ্তর সম্পাদক মো. শাহজালাল, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আবছারসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় সাংবাদিকরা।
নাগরিক পরিষদের ঘোষিত ৮ দফা দাবি হলো—
১. ব্রিটিশ আমলে প্রণীত পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি-১৯০০ বাতিল করে সংবিধানের আলোকে তিন পার্বত্য জেলার প্রশাসনিক ব্যবস্থা চালু করা;
২. জমি ক্রয়-বিক্রয়, চাকরি ও শিক্ষায় ‘রাজার সনদ’ প্রথা বাতিল করা;
৩. অন্যান্য জেলার মতো রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে ভূমি ব্যবস্থাপনা ও জমি ক্রয়-বিক্রয় চালু করা;
৪. বাজার ফান্ড প্লটের লিজ মেয়াদ ৯৯ বছরে উন্নীত করা ও বন্ধ থাকা ব্যাংক ঋণ পুনরায় চালু করা;
৫. উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির স্বার্থে বান্দরবানসহ তিন পার্বত্য জেলায় পরিবেশবান্ধব ইটভাটা, কলকারখানা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠান চালুর অনুমোদন দেওয়া;
৬. আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রত্যাহারকৃত ২৪৬টি সেনা ক্যাম্প পুনঃস্থাপন করা;
৭. অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করে চাঁদাবাজি, গুম, খুন ও ধর্ষণ বন্ধে সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা;
৮. শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা ও চাকরিসহ সকল ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করে সমান অধিকার ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।
নাগরিক পরিষদের নেতৃবৃন্দ জানান, সরকারের পক্ষ থেকে যদি দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস না আসে, তবে আগামীতে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।